অনেক আগের লিখা: নতুনদের জন্য কাজে লাগবে তাই আবার পোস্ট করলাম।
( প্রিলি + বিভিন্ন ব্যাংক + শিক্ষক নিবন্ধন + প্রাইমারী জবের গণিত অংশ নিয়ে যারা মহ টেনশনে আছেন, তারা সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ুন। ভয় দূর হবেই। )
গণিতের ভয়কে দূর করতে এই নোটটি অবশ্যই পড়ুন। শেয়ার করে অন্যকে পড়ারে সুযোগ করে দিন।
যারা গণিতে দুর্বল… গণিতে যাদের খুব ভয় আছে… গণিতকে সব সময় এড়িয়ে যান এই পোস্টটি তাদের জন্য। গণিত নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথা: নিচের কথাগুলো ভালোভাবে পড়লে আপনার (যারা গণিতে দুর্বল) গণিতের ভীতি ৫০% দূর হয়ে যাবে।
গণিত কেন এত গুরুত্বপূর্ণ??!!!!
বিসিএস সহ বাংলাদেশের যে কোন চাকুরীর পরীক্ষায় সম্পূর্ণ প্রশ্নের ২০-২৫ – 30% অর্থাৎ প্রায় এক চতুর্থাংশ প্রশ্ন গণিতের বিভিন্ন অংশ এবং মানসিক দক্ষতা অংশ থেকে আসে। চাকুরীভেদে কোথাও ৪০% ও (বিশেষ করে ব্যাংক নিয়োগ পরীক্ষায়) আসে,
=====এই চাকুরীর পরীক্ষায় অংশগ্রহণ কারীরা দেশের বিভিন্ন কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী যারা এস.এস.সি অথবা এইস.এস.সি এর পর একটা সুদীর্ঘ সময় গণিতের সংস্পর্শ থেকে অনেক দূরে থাকে। আর যে কারণেই অধিকাংশ ছাত্র-ছাত্রীরা গণিতকে ভয় পায় এবং গণিতে খুব খারাপ করে, এমনকি এমন ও দেখা যায় অনেকের চাকুরীই হচ্ছে না শুধু এই গণিতের জন্যই। ছাত্র-ছাত্রীদের বিভিন্ন কোচিং আর প্রাইভেট সেন্টারের দৌড়াদৌড়ি করার অন্যতম কারন ও হচ্ছে এই গণিত,
#অনেকেরই গণিতের প্রতি দূর্বলতা রয়েছে, অন্য বিষয়ের মত গণিত ঘরে বসে সহজে শেখা যায় না, এবং খুব দ্রুত গণিতের সমাধান করতে না পারলে পরীক্ষায় সময় অনুযায়ী উত্তর দেয়া সম্ভব হবে না।
*===গণিতে ভালো করা মানেই যে কোন চাকুরীর পরীক্ষায় ৫০% এগিয়ে থাকা। কারণ আপনার অধিকাংশ প্রতিদ্বন্দ্বীরা যেখানে দূর্বল সেখানে আপনি এগিয়ে থাকলে স্বাভাবিক ভাবেই আপনার ফলাফল ভালো হবে। এছাড়াও যারা গণিতে ভালো হবেন, অন্য বিষয়গুলো পড়ার সময় তাদের আত্মবিশ্বাস অনেক বেশি থাকবে। কেননা গণিতে ভালো হলে আপনার মাথার কোষগুলো বেশি দ্রুত কাজ করবে। (বিজ্ঞান সম্মত কি না তা জানি না তবে বাস্তব সম্মত) আর এ জন্যই গণিতে গুরুত্ব দিন।
#সাম্প্রতিক বিভিন্ন প্রশ্ন পর্যালোচনা করে দেখা যাচ্ছে সামন্য কিছু শর্টকার্ট যাদু শিখে যার পরীক্ষায় যাচ্ছে তারা পরীক্ষার হলে অন্ধকার দেখছেন, কারণ অনেক বেসিক বিষয় থেকে প্রশ্ন হচ্ছে, আপনার গণিতের ভিত্তি মজবুত হলে যে কোন প্রশ্নই খুব সহজে অতি অল্প সময়ে সমাধান করতে পারবেন। মনে রাখবেন, পরীক্ষায় গণিতের প্রতিটি প্রশ্নের জন্য সময় বরাদ্ধ থাকবে মাত্র ৩৫-৪০ সেকেন্ড। তাই শুধু গণিত পারলেই হবে না, পরীক্ষার হলের মানসিক চাপ নিয়ে খুব দ্রুত পারতে হবে।
—————-
#গণিত সবথেকে কঠিন আর বিরক্তিকর লাগে যাদেরকে তারা নিচের পয়েন্টগুলো দেখুন:
গণিত-ই সবথেকে সহজ এবং সবথেকে কম সময়ে প্রস্তুতি নিয়ে সবথেকে ভালো করা সম্ভব। কেন??
#কারণগুলোর হলো:
1.স্বাভাবিক: =====
গণিতই সবথেকে স্বাভাবিক এবং বাস্তবিক বিষয়। যেকারণে এখানে সাধারণত কোন উদ্ভট প্রশ্ন করা যায় না। দেখুন আফ্রিকার জঙ্গলে কত প্রজাতির সাপের সন্ধান পাওয়া গেছে?? উত্তর দিন – এই প্রশ্নটা খুব উদ্ভট মনে হতে পারে। অধিকাংশেরই অজানা কিন্তু এরকম প্রশ্নও বিভিন্ন পরীক্ষায় আসতে পারে। যেমন: সুন্দর বনে কত প্রজাতির হরিণ দেখতে পাওয়া যায়?(৩৫ তম বিসিএস) ক.২ গ.৪ খ.৩ ঘ.৫
2.অপরিবর্তনীয়:=======
গণিতের কোন পরিবর্তন নেই, তাই এর সাম্প্রতিক ও নেই, অর্থাৎ ১০বছর আগেও যেভাবে অংক ছিল, এখনও তাই আছে, ভবিষ্যৎ এ ও তাই থাকবে । কিন্তু অন্য বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে সময়ের সাথে সাথে প্রশ্ন ও পরিবর্তিত হয়।
যেমন: নরেন্দ্র মোদীর শপথ অনুষ্ঠানে মোট কয়টি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান উপস্থিত ছিল?(৩৫তম বিসিএস) ( কোন বই থেকে আসে নি)
3.সংক্ষিপ্ত: =======
গণিতের অধ্যায় অনেক কম কিন্তু অন্য বিষয়গুলোর অধ্যায়ের সংখ্যাই এতো বেশি যে অধ্যায় দিয়েই এক একটি বই বানানো যাবে। সংশয়হীন উত্তর: নিচের প্রশ্নটি দেখুন:
**রাষ্ট্রের শান্তির জন্য কোনটি আগে দরকার??
ক.সুশাসক খ. স্বাধীন বিচার বিভাগ গ. জনগণের সচেতনতা ঘ.দক্ষ আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী
>>>>এখানে ভিন্ন ভিন্ন দিক থেকে দেখলে উত্তর ভিন্ন হবে।
১০ জনকে জিজ্ঞেস করলে আলাদা আলাদা উত্তর দিবে। কিন্তু গণিতের উত্তরে অন্য যে কোন বিষয়ের উত্তর বের করার মত সংশয় লাগবে না। কেননা একই অংক ১০০০ জন সঠিকভাবে করলেও উত্তর একই আসবে। কিন্তু অন্য বিষয়ে একই প্রশ্নের ভিন্ন ভিন্ন সংশয়পূর্ণ উত্তর রয়েছে।
 
4. #লিমিটেড বিষয়: =====
গণিতের একটা নির্দিষ্ট সীমা আছে অন্যগুলোর সীমা নেই। বাংলা, ইংরেজী আর সাধারণ জ্ঞানের পাশে গণিতের তুলনা করলেই বুঝতে পারবেন, সবগুলো সীমাহীন বিষয়ের পাশে গণিতের সিলেবাস কত ছোট!!
5. #দুশ্চিন্তাহীণ বিষয়: =====
অন্য বিষয়ে কমনের চিন্তা করতে হয়। কিন্তু গনিতে কোন কমনের চিন্তা করতে হয় না। অর্থাৎ নিয়ম জানলে যেভাবেই আসুক পারা যাবেই। তাই পরীক্ষার হলে ঢোকার আগেই আপনি গণিতে আত্মবিশ্বাসি হয়ে যেতে পারবেন। প্রশ্নপত্র না দেখেই!!! অন্য কোন বিষয়ে কি এভাবে সম্ভব????
6. #নির্ভরযোগ্য: =====
অন্য বিষয়ে ৭০% + নম্বর পাওয়ার জন্য আপনাকে অনেক পরিশ্রম, আপটুডেট, মুখস্ত শক্তিতে পাওয়ারফুল হতে হবে, কিন্তু গণিতে ৩-৪ মাস সময় দিলেই অনায়াসে ৯৫%+ নম্বর পেতে পারবেন, এমনকি পরীক্ষা দেয়ার আগেই আপনার এ আত্মবিশ্বাস তৈরী হবে।
7. #বাস্তবিক: =========
গণিতই সবথেকে বাস্তব জীবনের সাথে মিলে যায়, অর্থাৎ চলতে ফিরতেই আমরা গণিতের সাথে অভ্যস্থ যেমন, এই বইটিই কেনার সময় আপনার কত টাকা লাগবে? কত % কমিশন আছে? দোকানদার কত % লাভ করে, এগুলো সব মিলেই তো গণিত?? গণিতের থেকে অন্য কোন বিষয় আপনার লাইফের সাথে এতোটা ওতপ্রোতভাবে জড়িত আছে কি ?
#গণিত ছাড়া অন্য বিষয়গুলো কম গুরুত্বপূর্ণ তা নয়। বরং অন্য বিষয়গুলিতে আপনার যত সময়, শ্রম দিয়ে নম্বর পেতে হবে, গণিতে তার থেকে খুব কম সময় দিয়ে বেশি নম্বর পাওয়া সম্ভব, এবং গণিতেই শুধুমাত্র ১০০% নম্বর পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এটাই বোঝানোর চেষ্টা করলাম।
——————-
#এতো এতো ভালো দিক থাকার পরেও কেন অধিকাংশ ছাত্র-ছাত্রীরা গণিতে দূর্বল?? কারণ হলো এস.এস.সি, অথবা এইস.এস.সি এর পরে একটা সুদীর্ঘ সময় অনেকেই গণিতকে স্পর্শও করে দেখি না। গণিত যেহেতু চর্চার বিষয়, তাই চর্চার সুযোগের অভাবে অনেকেই অধিকংাশ অথবা সবকিছুই ভুলে যাই। অনেকেই কিছু গণিত পাড়লেও একটি প্রশ্ন ২০-৩০ সেকেন্ডে সমাধান করার মত করে শিখি নি।
আর সবথেকে বড় কথা হল, অন্য বিষয়গুলো ঘরে বসে একাকী পড়া এবং পারা যায়, কিন্তু দ্রুত গণিত পারার জন্য কিছু টেকনিক শিখতে হয়, যার জন্য একটা ভালো বই অথবা একজন ভালো শিক্ষকের প্রয়োজন।
 
#আপনি নিজেকে দূর্বল ভাবছেন?!!!!!
======================
মনে রাখবেন,,, সারা বাংলাদেশের অধিকাংশ ছাত্র-ছাত্রী ( যারা আপনাদের প্রতিদ্বন্দ্বীও বটে) গণিতে অনেকেই দূর্বল আর যারা দূর্বল, তাদের দূর্বলতা মেধার ঘাটতির জন্য নয়, বরং প্রাকটিস এবং সময়ের ঘাটতির জন্যই, অনেকেরই একই অবস্থা আর যারা প্রতিদ্বন্দ্বীদের দূর্বল বিষয়ে শক্তিশালী হবেন, স্বাভাবিকভাবেই তারা যে কোন প্রতিযোগীতামুলক পরীক্ষায় এগিয়ে থাকবেন। তাই যত আগে গণিত শিখে রাখবেন, ততই আপনি অন্যদের থেকে অনেক এগিয়ে থাকবেন।
#আমি গণিত নিয়ে সবসময় থাকি বলেই এই কথাগুলো বলতেছি তা না। একটা সুদীর্ঘ সময় আমি ইংরেজীসহ অন্যান্য অনেক বিষয় নিয়ে ভেবেছি এবং পড়িয়েছি,, কিন্তু গণিত শেখা ও শেখানোর মত মজা অন্য কোন বিষয়ে নেই। কিছু দিন সময় দিলে যে কাউকে মজা লাগবেই। আর আমার উপরের কথাগুলো এ কারণে ১০০% সত্য যে, গণিত নিয়ে আমার অভিজ্ঞতাগুলো অনেক দিনের এবং অনেক বাস্তবিক।
#কিন্তু যদি ইংরেজী অথবা অন্য কোন বিষয়ে যতই এক্সপার্ট হোক না কেন পরীক্ষার আগেই ১০০% উত্তর দিতে পারবে, বলার মত কনফিডেন্ট লোক পাওয়া খুব টাফ!!! ( সুপার ট্যলেন্টেড দু এক জন বাদে) প্রাকটিকাল অভিজ্ঞতা থেকে বললাম।
#মোট কথা:=============
যে কোন জবের পরীক্ষায় সাধারণ জ্ঞান, বাংলা, বিজ্ঞান,ইংরেজী থেকে গণিতই সবথেকে সহজ.. আর জবের পরীক্ষায় এমসিকিউ প্রশ্নে এত্ত সহজ প্রশ্ন আসে যে শুধু প্রতিটি অধ্যায় একবার করে ভালোভাবে বুঝে বুঝে সমাধান করে দেখুন। এ সংক্রান্ত একটা ভিডিও ইউটিউব এ আপলোড দেয়া হয়েছে (Goniter gurutto ) লিখে সার্চ দিয়ে ভিডিও টি দেখে নিতে পারেন…
(এ গুলো প্রচারের জন্য বলা নয়,, শুধুমাত্র কিছু ভাই – বোন দের গণিত ভীতি দূর করে আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনার জন্য বাস্তব অভিজ্ঞতার আলোকে লেখা )
লিখেছেন : মো: খাইরুল আলম