লিখিত পরীক্ষায় যে যত বেশি নাম্বার পাবে তার ভালো করার সম্ভাবনা তত বেশি থাকবে । উদাহরণ দিই —- কেউ যদি লিখিত পরীক্ষায় ৯০০ তে ৫৮০ পায় এবং ভাইভাতে তার খারাপ হবার কারনে ২০০ তে ১০০ পেল , তারমানে তার মোট নাম্বার ৬৮০, লিখিত পরীক্ষায় কেউ ৫৩০ পেল এবং তার ভাইভা পরীক্ষা বেশ ভালো হওয়াতে সে ভাইভাতে পেল ১৪০, মানে ৭০% নাম্বার, তার মোট নাম্বার দাঁড়ালো ৫৩০+১৪০= ৬৭০, আপনিই বলুন চাকুরী কার হবে ? যার নাম্বার বেশি , মানে প্রথমজন তাইনা ?
এখন প্রাসঙ্গিক বিষয়ে আসি জেনারেল ক্যাডারের মাধ্যমে একজন পরীক্ষার্থী প্রশাসন , পুলিশ, ফরেন , ট্যাক্স , কাস্টমস, অডিট, ইকনোমিক, সমবায় , ফুড, রেল এসব ক্যাডারে জব পায় , আর টেকনিক্যাল ক্যাডারে পরীক্ষার মাধ্যমে পরীক্ষার্থী তার graduation এর সাবজেক্ট related জব পায়, যেমন কৃষি অফিসার, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, বিভিন্ন বিষয়ের সরকারী কলেজের শিক্ষক ইত্যাদি ।
শুধু জেনারাল ক্যাডার চয়েস দিলে জেনারাল ক্যাডারে চান্স পাওয়ার মত যদি তার সর্বমোট নাম্বার না থাকে এবং জেনারাল ক্যাডারে তার জব না হয় , কিন্তু এ অবস্থায় তার টেকনিক্যাল ক্যাডারে জব পাওয়ার মত নাম্বার থাকলেও পরীক্ষার্থী চয়েস না দেয়ার কারনে সে টেকনিক্যাল ক্যাডারে চান্স পাবেনা , একইভাবে শুধু টেকনিক্যাল ক্যাডারে পরীক্ষা দিলে পরীক্ষার্থীর জেনারাল ক্যাডারে চান্স পাওয়ার মত নাম্বার থাকলেও সে টেকনিক্যাল ক্যাডারেই চান্স পাবে , আর both ক্যাডার চয়েস দিলে কেউ যদি জেনারাল ক্যাডারে চান্স না পায় সেক্ষেত্রে একটা সুযোগ থাকে টেকনিক্যাল ক্যাডারে চান্স পাওয়ার । তবে মূলকথা জেনারাল বা টেকনিক্যাল যে ক্যাডারেই হোক না কেন আপনার লিখিত পরীক্ষাতে অবশ্যই ভালো করার চেষ্টা করতে হবে । প্রিলি পরীক্ষা সবার জন্য এক । জেনারাল ক্যাডারের জন্য লিখিত পরীক্ষায় ৯০০ নাম্বার ( বাংলা – ২০০, ইংরেজি – ২০০, সাধারন জ্ঞান বাংলাদেশ – ২০০, সাধারন জ্ঞান আন্তর্জাতিক – ১০০, গনিত ও মানসিক দক্ষতা ও বুদ্ধিমত্তা – ৫০+৫০ = ১০০ , বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি – ১০০ ) ।
শুধু টেকনিক্যাল ক্যাডারে পরীক্ষা দিলে লিখিত পরীক্ষায় বাংলা দ্বিতীয় পত্র ও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি পরীক্ষার ২০০ নাম্বারের পরীক্ষার পরিবর্তে ২০০ নাম্বারের আপনার graduation এর বিষয়ের লিখিত পরীক্ষা দিতে হবে ( এজন্য প্রতিটি বিষয়ের সিলেবাস রয়েছে যেখানে আপনি আপনার বিষয়ের সিলেবাস পাবেন ) । আর both ক্যাডারে পরীক্ষা দিলে আপনাকে জেনারাল ক্যাডারের ৯০০ নাম্বারের লিখিত পরীক্ষার সাথে অতিরিক্ত আপনার graduation এর বিষয়ের ২০০ নাম্বারের লিখিত পরীক্ষা দিতে হবে ।
এবার আসি ভাইভাতে —- ভাইভা জেনারাল ক্যাডার এবং both ক্যাডারের জন্য মোটামুটি একই , কিন্তু যারা শুধু টেকনিক্যাল ক্যাডারে পরীক্ষা দেয় তাদের মূলত তাদের নিজস্ব graduation এর বিষয়ের ওপর প্রশ্ন করা হয়, এছাড়া টুকটাক বেসিক সাধারন জ্ঞানের বিষয়ে জিজ্ঞেস তো করা হয়েই থাকে ।
আপনি আপনার ইচ্ছেমত চয়েস দেবেন, যে টাইপ জব ভালো লাগে সেটা চয়েস দিন , জেনারাল, টেকনিক্যাল, বা both ক্যাডারে চয়েস দেয়াটা আপনার ব্যক্তিগত বিষয় ।
**** বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ কথা —— শুধু বিসিএস পরীক্ষা দেয়া এবং অন্য পরীক্ষা না দেয়াটা ঠিক না । বিসিএস পরীক্ষার জন্য আপনি যদি ভালমতো প্রস্তুতি নিন তাহলে অন্যান্য সকল চাকুরীর পরীক্ষাতে কাজে আসে, তাহলে কেন অন্য পরীক্ষাগুলো দেবেন না ? বিসিএস এ সিট কয়টি থাকে সেদিকেও একটু খেয়াল রাখা দরকার তাইনা ? আগেতো আপনার পায়ের নিচে একটু ঠাই দরকার নাকি, মানে আপনার একটা চাকুরী দরকার right ( যদি আপনি চাকুরীকে ক্যারিয়ার হিসেবে নিতে চান ) ? সেটা ছোট বড় যে চাকুরীই হোকনা কেন । কারণ যেকোনো একটা চাকুরী পেলে আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়বে যা আপনাকে পরবর্তী পরীক্ষাতে সাহায্য করবে । আপনি যেকোনো ভালো বেসরকারি চাকুরী হলে অবশ্যই সেখানেও আবেদন করুন । আগে আপনার নিজের জানাটা জরুরী ভালো ভালো কি কি চাকুরী আছে আমাদের দেশে, অনেকে কত চাকুরীতে আবেদনই করেনা শুধু না জানার কারনে । পোস্ট ১ টি বা ২ টি থাকলেও সেখানে পরীক্ষা দিন, সমস্যা নেই তো , সেখানে আপনারই মতই কেউ না কেউই তো জব পাচ্ছে , ভূত এসে তো সিট দখল করে নিচ্ছে না তাইনা ? আর চাইলে চাকুরী করেও অন্যান্য চাকুরীর পরীক্ষা দেয়া যায়, একটু বেশি শ্রম যাবে, সেটা মেনে নিতে হবে, ওই যে বলেছি কষ্ট আপনাকে করতেই হবে ভালো পজিশনে যেতে চাইলে । নিজেকে ছোট ভাববেন না, নিজের ওপর confidence বাড়ানোর চেষ্টা করুন , বেশি বেশি স্টাডিতে সময় দিন, দিনদিন নিজের জ্ঞানটাকে আরও সমৃদ্ধ করুন । একবার না হলে দুইবার তিনবার চারবারের বার তো ভালো কিছু একটা হবার চান্স থাকবে । আপনি থেমে গেলেন তো সবই থেমে গেল, চেষ্টা চালিয়ে গেলে সফল হবার সম্ভাবনাটা তো থাকে , তাইনা ?? হতাশ না হয়ে এগিয়ে যান । সফলতা আপনার কাছে এমনিই এসে হাজির হবে । ভালো থাকবেন সবাই । good luck guys .