পূবালী ব্যাংক বাংলাদেশের  সবচেয়ে বড় বেসরকারি ব্যাংক.. এবং বর্তমানে প্রতি বছরই পূবালী ব্যাংকের অবস্থান উপরের দিকেই উঠছে… এভারেজ করলে দেশের প্রথম পাচটি ব্যাংকের মধ্যেই পূবালীর অবস্থান..খুব স্বাভাবিকভাবেই পূবালীর সার্কুলার হলে চাকুরী প্রার্থী ভাই বোনেরা আগ্রহী হয়ে উঠেন…এবং সে বিষয়েই কিছু কথা বলবো…
পোস্টের শুরুতে দুইটা বিষয় ক্লিয়ারলি বলি..
১. পূবালীতে একমাত্র এবং একমাত্র যোগ্য প্রার্থীরাই নিয়োগ পায়.. পূবালীর নিয়োগ বাংলাদেশের সবচেয়ে স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়াগুলোর একটা … এই কথাটা আমি দায়িত্ব নিয়েই বলছি..
একটা উদাহরণ দেই…
২০১৭ সালের নিয়োগের সময় আমার পরিচিত এক ছেলে আমাকে বলেছিল ” আপু আমি এলাকা প্রতিমন্ত্রী দিয়ে লবিং করাচ্ছি…  আমার চাকুরী টা হবে কনফার্ম…”
বিশ্বাস করেন তার চাকরি হয় নি…
পূবালীতে চাকুরী পাওয়ার একটাই যোগ্যতা তা হলো আপনার মেধা…
২. পূবালীর নিয়োগ অনেক দ্রুত হয়ে যাবে…
কোন ঝামেলা না হলে সার্কুলার দেয়ার ছয় মাসের মধ্যে আপনি ব্রাঞ্চে থাকার কথা.. তবে এবার যেহেতু নির্বাচন সামনে তাই কি হবে সঠিক বলতে পারছি না.. কিন্তু মানসিক প্রস্তুতি রাখা ভালো যে দ্রুতই সব পরীক্ষা হয়ে যাবে..
এবার বলি প্রস্তুতি বিষয়ে কথা…
আমি পূবালীর জন্য কোন প্রিপারেশনই নেই নি.. ইনফ্যাক্ট আমি তো পূবালীর পরীক্ষাও দিতে চাই নি.. আমার যেদিন পূবালীর এক্সাম ছিল (আমাদের প্রিলি রিটেন একসাথে হয়) সেদিন স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের ও একটা পরীক্ষা ছিল..
আমি পূবালীর প্রশ্ন কঠিন হয়ে ভেবে কনফিউজড ছিলাম কোনটায় এটেন্ড করবো.. মনে মনে যদিও স্ট্যান্ডার্ড দেয়ার নিয়ত ছিল..  কিন্তু আমি শেষ পর্যন্ত পূবালীর পরীক্ষা দেই একটা কারনেই আর তা ছিল স্টেশন থেকে পূবালীর সেন্টার কাছে ছিল..
আমি যদি সহজে বলি তাহলে এমন ” আমার রিজিক আমাকে পূবালীতে টেনে নিয়ে গিয়েছিল..”
এখন বলবেন আপু আপনি তো কিছু না পড়েই চাকরি পাইছেন..  আপনি কি সাজেশন দিবেন?
ভাইরে চাকরি যদি এত সহজ হতো আমি কি আর বসে বসে এত বড় পোস্ট লিখতাম?
আমার পূবালীর জন্য প্রস্তুতি ছিল না সত্য কিন্তু আমার বিসিএসের জন্য বেশ ভালো প্রস্তুতি ছিল এবং যা দিয়ে আমি বেশ ভালোভাবেই পূবালীর এক্সাম পার হয়ে যাই…
তবে যারা সিরিয়াসলি পূবালীর নিয়োগ নিয়ে পড়তে চাচ্ছেন.. তাদের জন্য কিছু বলি…
১) প্রথমেই বিগত বছর পাচেকের ব্যাংক প্রশ্ন সলভ করে ফেলুন..  সরকারি, বেসরকারি সব ব্যাংকের প্রশ্ন সলভ করা উচিত…আর পূবালীর যত প্রশ্ন পান সব সলভ করা তো ফরজ.. আপাতত প্রিলির প্রশ্নই সলভ করা উচিত..
২. কারেন্ট ইস্যু গুলো কারেন্ট এফেয়ার্স থেকে দেখে নিন..  গত দুইমাস থেকে শুরু করে এক্সাম পর্যন্ত কারেন্ট ইস্যুর বিভিন্ন তথ্য দেখতে পারেন..
৩. যাদের কমন মিস্টেকস বইটা পড়া আছে.. তারা কমন মিস্টেকস রিভিশন দিয়ে ফেলেন.. আর পড়া না থাকলেও যেহেতু হাতে সময় আছে একটু পড়তেই পারেন..
কঠিন মনে হলে ইংলিশ ফর কম্পিটিটিভ এক্সাম বইটার প্রথম পাচ অধ্যায় ভালো ভাবে পড়ে বাকি অধ্যায় গুলো ও পড়ে নিতে পারেন..
৪. কম্পিউটারের জন্য আপনার যে বই ভালো লাগে পড়েন.. আমি ইজি পড়তাম.. ইজি আমার কাছে ইজিই মনে হতো..
ইনফ্যাক্ট কম্পিউটারের কঠিন প্রশ্নের এই যুগেও আমি ইজিই পড়েছি এবং আল্লাহর রহমতে লাস্ট সোনালী ব্যাংকের সিনিয়র অফিসারের প্রিলি পর্যন্ত সব প্রিলি পাস করেছি…
৫. বাংলা আমি সৌমিত্র শেখরের জিজ্ঞাসা আর নাইন টেনের ব্যাকরণ বই  পড়েছি..
সব পড়তে হয় না এসব বইয়ের.. যেসব টপিক এক্সামে আসে সেগুলোই বারবার চোখ বুলাতে হয়… আপনি প্রিভিয়াস বছরের প্রশ্ন স্টাডি করলেই বুঝতে পারবেন কোন বই থেকে কতোটুকু আর কি কি পড়া উচিত…
প্রিলির পড়া বারবার রিভিশন আর ডিসকাস করে পড়লে বেশি মনে থাকে বলে আমার মনে হয়.. গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন যেসবে আপনি কনফিউজড হয়ে যান সেগুলো লিখতে পারেন বারবার..
আমি একটা জিনিস সবসময় বিশ্বাস করি..  যা কঠিন তা সবার জন্য কঠিন সেটা আমার না পারলেও চলবে.. কিন্তু যা সহজ তা আমাকে পারতেই হবে.. কারন প্রিলির পাস ফেল  কঠিন  প্রশ্ন দিয়ে হয় না.. পাস ফেল নির্ধারণ  হয় সহজ প্রশ্নে কনফিউজড হওয়া নিয়ে…
আর এই পোস্টে যা লিখেছি তা আমার অভিজ্ঞতার প্রেক্ষিতেই লিখেছি.. দ্বিমত থাকতেই পারে… যাদের দ্বিমত আছে তাদের অনুরোধ করবো আপনারাও আপনাদের অভিজ্ঞতা আর চিন্তাভাবনা নিয়ে পোস্ট দিন যাতে নতুনদের জন্য রাস্তাটা সহজ হয়.. নিজের মধ্যে রেখে অন্যের পোস্টে পন্ডিতি করলে যেমন আপনার কোন ফায়দা নাই তেমনি নতুন চাকুরী প্রার্থীদের ও ফায়দা নাই..
সবশেষে বলি…
সহজ ভাবে প্রস্তুতি নিন.. তবে কঠিন পরিশ্রম করুন.. কারন আল্লাহ নিশ্চয়ই পরিশ্রমকারীদের নিরাশ করেন না…
কার্টেসি: Hasna Hasi (হাসনা হাসি)