প্রশাসন ক্যাডারে কর্মরত একজন এক্স-বুয়েটিয়ান লিখেছেন।

১. ভাইয়া, কোচিং এ ভর্তি হয়েছি। ম্যালা টাকা নিছে।


২. কোচিং এর স্যার/ক্যডার/ভাইয়ারা বলছে, ডেইলি ১০~১৫ ঘন্টা না পড়লে ক্যডার হওয়া মুশকিল ই নেহি, না মুমকিন হ্যেয়। আমাদের যাদের দেখছো, তারা সবাই দিনে ১০~১৫~১৮~২৪~২৮~৩০ ঘন্টা পড়ে ক্যডার হয়েছি !
৩. সৌমিত্র শেখর কি পুরোটা মুখস্ত করব ?
৪. ভাইয়া, কিছু মনে থাকে না, আমার কি হপে ?
আমার ব্যক্তিগত অভিমত হচ্ছে, কোচিং সেন্টারে ভর্তি হওয়ার কোনো দরকার ই নাই। অন্তত প্রিলির জন্য তো নয় ই। একটু মন দিয়ে শোন। বিসিএস প্রিলির প্রশ্ন খুব ই ক্যপ্রিশিয়াস। কোথা থেকে আসবে কেউ জানে না। কোচিং সেন্টারের উনারা তো নয় ই। কোচিং সেন্টার গুলোর একটা ট্রেন্ড হলো, কোন একটা বিষয়ে যদি একটা প্রশ্ন এসে থাকে, তাহলে ঐ রিলেটেড সব প্রশ্ন ছাত্র দের উপর চাপিয়ে দেয়া। উদাহরণ দেয়া যাক, কোন এক কালে এসেছিলো, বস ফরাস প্রণালী নিয়ে। বাস, দুনিয়ার যাবতীয় প্রণালী/ নদী/নালা/খাল বিল সব মুখস্ত করার জন্য শিটে দিয়ে দিলো। এমন উদাহরণ প্রচুর দেয়া যাবে।
স্লাম ডগ মিলিওনিয়ার মুভিটা না দেখে থাকলে দেখে ফেলো। এখানে নায়ক মিলিওন ডলার জিতে পড়াশুনা করে নয়, বরং জীবনের বিভিন্ন ঘটনা প্রবাহে ঠেকে খুব অল্প কিছু শিখে। ভাগ্যক্রমে প্রশ্ন তার থেকেই হয়। প্রিলির প্রশ্ন হুবহু তাই। তার মানে এই নয় যে পড়াশুনা করবে না। অবশ্যই করবে, এবং খুব স্মার্টলি করবে।
প্রায়ই একটা কথা বলি, পেরাডক্স অফ চয়েজ। তোমার ব্রেইন যদি খুব অল্প সময়ে অনেক বেশি ডাটা/অপশন নিয়ে কাজ করে, সে কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারবে না। বিসিএস এর পড়ায় সত্য কথা বলতে মেধা থেকে পেসেন্স অনেক বড় বিষয়।
পরীক্ষার প্রিপারেশন নাও পরীক্ষার দিনের জন্য নয়। বরং পরীক্ষার আগের দিন রাতের জন্য। তুমি এখন সৌমিত্র শেখরের আধুনিক যুগ মুখস্ত বলতে পারবে, কিন্তু বাজি ধরে বলতে পারি, পরীক্ষার আগের রাত বা পরীক্ষার দিন, সব ভুলে যাবে। অভিজ্ঞতা থেকে বলছি। ট্রাস্ট মি, কম পরো, কিন্তু মনে রাখো। কাজে দিবে। যা পড়বে, একটা খাতায় লিখে রাখো। একজামের আগে শুধু তা-ই পরো। সিলেবাসের সাগরে নৌকা যখন চালাবেই, সারা সমুদ্র ঘুরে লাভ নাই। ডেস্টিনেশানে পৌঁছাতে যত টুকু যাওয়া দরকার, তত টুকুই চালাও। ১০~১৫ ঘন্টা গাধাঁর মত পড়ে কোন লাভ নাই, বরং ২ ঘন্টা সিংহের মত পড়ো।
প্রিপারেশানের জন্য প্রথমেই আমি বলো, ২৭ থেকে ৩৬ তম সব প্রিলির প্রশ্ন পড়ে নাও। মনে হবে কিছুই না, কিন্তু পরতে গেলে দেখবে কত পরিশ্রমের কাজ। ম্যাথ গুলো কর। বার বার কর। কোনো শর্টকাট টেকনিক শেখার দরকার নাই। পরিক্ষার হলে কাজে লাগাতে পারবে না। বার বার প্রেক্টিস করো।
পারলে জি আর ই পড়া ও সাথে সাথে করো। বলছি কাজে দিবে। বাংলার জন্য ক্লাশ নাইন টেনের গদ্য পদ্য বই এর কবি পরিচিতি পড়ে রাখবে, আলাদা করে রবিন্দ্র, নজরুল একটু জোড় দিও । নাইন টেনের ব্যকরণ বই এর সন্ধি ,সমাস ,এক কথায় প্রকাশ দেখে রাখতে পারো। সৌমিত্র/লাল নীল দিপাবলী পরে তেমন লাভ নেই। মনে রাখতে না পারার ই কথা……
বাকিটা আরেক দিন লেখবো।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

x
Scroll to Top