পড়লাম না, এখন কীভাবে কী করব? আমি কীভাবে এতো অল্প ভালো প্রস্তুতি নিবো? কীভাবে পরীক্ষায় পাশ করতে পারব? আমি কি আসলে পরীক্ষায় পাশ করতে পারবো?” ইত্যাদি ইত্যাদি।
এখানে বলে রাখি, এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রাইমারি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির মধ্যে আমার জানমতে সর্বোচ্চ। কেননা, এই সার্কুলারে ১৩, ১০০ সহকারী শিক্ষক নিয়োগ দিবে (আগে বলা হয়েছিল ১২ হাজার নিবে। ফাইনালি আরো ১১০০ বেড়েছে)! যদিও আবেদন করেছে ২৪ লাখ। সেটা ভেবে মন খারাপ করার বা ভয়ের কিছু নেই।
অনেকে আছে শুধু পরীক্ষার দেয়ার জন্য পরীক্ষা দিবে। তাই আপনি ভাবুন ১৩ হাজার নয় ১৩ জন নিলেও আমি সেই লিস্টে থাকবো ইনশাল্লাহ। তাহলে আপনার সেই মনোবল আপনাকে অনেকদূর নিয়ে যাবে।
.এবার আসি এই কয় দিন কী কী পড়বেন। আমি মনে করি, যেহেতু সময় একদম কম তাই সব না পড়ে কেবল Important বিষয়গুলো পড়ুন, যেখান থেকে বেশি বেশি কিংবা বারবার প্রশ্ন আসে।
এখন প্রশ্ন হলো আমি তা কীভাবে বোঝবো? উত্তর একদম সময়- আপনি যদি “প্রাইমারি সহকারী নিয়োগ পরীক্ষা”র প্রশ্নগুলো ভালোভাবে খেয়াল করেন। তাহলে দেখতে পাবেন কোন টপিক থেকে বেশি প্রশ্ন এসেছে। (আপনার হাতে এতো সময় না থাকলে শুধু “Professor Job Solution বা প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ সহায়িকা follow করলেই হবে)
প্রফেসর প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ সহায়িকা বইতে কোন অংশ থেকে কোন সালে কতটি প্রশ্ন এসেছে সেগুলো ভালোভাবে পরিসংখ্যান আকারে দেয়া আছে।
যেমন বাংলা ব্যাকরণ থেকে প্রশ্ন থাকে ১৭-১৮ এর মতো ২০ টির মতো। বাকি ২ তিনটি আসে সাহিত্য থেকে।
তাই এখন বাংলা সাহিত্য না পড়ে কেবল ব্যাকরণ পড়ুন। সাহিত্য যা যা পড়েছেন। এখন আর পড়ার দরকার নেই। একান্তভাবে পড়তে চাইলে শুধু রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, বঙ্গিম, শরৎচন্দ্র, জহির রায়হান, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় ও জসীমউদদীন পড়ুন।
ব্যাকরণে প্রথমে কারক-বিভক্তি ভালো করে পড়ুন, এখান থেকে ২-৪ টি প্রশ্ন থাকে, তারপর এক কথায় প্রকাশ, সমাস এই টপিকগুলো ভালো করে পড়ুন। সাথে বাগধারা, সন্ধি, সমার্থক ও বিপরীত শব্দ।
ইংলিশে Grammar থেকে প্রশ্ন থাকে ১৯-২০। মানে ইংলিশ লিটারেচার থেকে মাঝে মধ্য একটি প্রশ্ন থাকে। তবে ইংলিশ লিটারেচার থেকে ১টি প্রশ্নও না আসার সম্ভাবনা ৬০%। তাই লিটারেচার বাদ দিন। একান্ত পড়তে হলে শুধু Shakespeare, John Milton পড়ুন কিছু।English Grammar এ আগে Vocabulary না পড়ে থাকে নতুন করে না পড়াই উচিত।
English Grammar এ বেশি জোর দিন Parts of Speech, Tense। এই ২ টপিক থেকে ৪-৫টা প্রশ্ন থাকতে পারে।
তারপর Preparation, Correct Spelling, Right form o Verbs, Subject Verb Agreement. সাথে পড়ে ফেলুন Condition Voice Change ও Narration, Phrase & Idioms. আর সব বাদ দিন এখন।
গণিতের জন্য বীজ গণিতের মান নির্ণয়, শতকরা, লাভ-ক্ষতি, সুদ-আসল, গড়, সংখ্যা, উৎপাদক, অনুপাত ও ভগ্নাংশ পড়ুন। সাথে লসাগু ও গসাগু, ঐকিক নিয়ম । বাকি সব বাদ দিন এখন।
এখানে বলে রাখি শতকরা, গড় ও বীজগণিতের মান নির্ণয় থেকে প্রশ্ন বেশি থাকে।
জ্যামিতির অংশ থেকে কেবল বিভিন্ন প্রকার কোণ, সমকোণী ত্রিভুজ, বর্গক্ষেত্র ও আয়তক্ষেত্র পড়ুন বাকি সব বাদ দিন।
সাধারণ জ্ঞানের জন্য বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, ৬-দফা, মুজিবনগর সরকার, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মোঘল আমল, ইংরেজ আমল ও প্রাচীন যুগ ভালো করে পড়ুন। সাথে অর্থনৈতিক সমীক্ষা ভালো করে পড়ুন। বীরশ্রেষ্ঠগুলো ভালো করে পড়ুন।
এই মুহূর্তে বিজ্ঞান, ICT নতুন করে আর কিছু পড়বেন না।আন্তর্জাতিক থেকে তেমন প্রশ্ন থাকে না। ২-১ টা যা থাকে কেবল জাতিসংঘ ও বিভিন্ন সংস্থার সদরদপ্তর কোথায়, এই জাতীয় প্রশ্ন থাকে। তাই বাকি সব বাদ দিন।
আর সাম্প্রতিক থেকে ২-৩টা প্রশ্ন থাকে। তাই সব না পড়ে কেবল আলোচিত ঘটনাগুলো পড়ুন। বাকিসব বাদ দিন। সময় না পেলে সাম্প্রতিক না পড়াই উচিত। পড়লেও কেবল পরীক্ষার ১-২ দিন আগে পড়বেন। এখন পড়লে আবার ভুলে যেতে পারেন।
বিসিএস প্রিলির প্রশ্নগুলো সমাধান করুন। বিশেষ করে ৩৫তম-৩৯তম। অবশ্যই সুশাসন, ভূগোল, ইংলিশ লিটারেচার, বাংলা লিটারেচার, বিজ্ঞান ও আইসিটি বাদ দিয়ে। তাহলে দ্রুত শেষ করতে পারবেন। হাতে সময় না থাকলে এইসবের ব্যাখ্যা না পড়ে শুধু উত্তরগুলো পড়লেই হবে।
উল্লেখ্য যে, পরীক্ষার্থী যেহেতু ২৪ লাখ। তাই একসাথে সব জেলায় পরীক্ষা হবে না।
২। পরীক্ষা হবে শুধু MCQ+ Viva। রিটেন হবে না।
মনে রাখবেন, এই কয় দিন ভালোভাবে কাজে লাগাতে পারলে আপনার ও আপনার পরিবারের ভাগ্যে অনেক পরিবর্ত্ন আসতে পারে। তাই সময় নষ্ট না করে বেশি বেশি পড়ুন শুধু Important বিষয়গুলো বারবার; যেন পরীক্ষার হলে গেলে Confused না হন।
আরেকটি কথা মনে রাখবেন, এই পৃথিবীতে কেউ কাউকে সুযোগ করে দেয় না, নিজের সুযোগ নিজেকে তৈরি করে নিতে হয় যোগ্যতা ও পরিশ্রম দিয়ে। আপনি ১ ঘণ্টা বেশি পড়া মানে ১ ঘণ্টার পথ এগিয়ে গেলেন সাফল্যের পথে। .